Monday, September 20, 2021

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ফের বাড়ল ছয় মাস

 

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ফের বাড়ল। তৃতীয় দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে সরকার। তবে বহাল রাখা হয়েছে আগের দুই শর্ত। এ সময় তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। নিজ বাসায় থেকে নিতে হবে চিকিৎসা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবার শর্তসাপেক্ষে সময়টা বৃদ্ধির জন্য একটি আবেদন করেছিলেন। আমরা সেই আবেদন যথাযথ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমোদন দিয়েছি। তিনি (খালেদা জিয়া) নিজ বাসায় থেকে যেভাবে চিকিৎসা নিতে চান, সেভাবে চিকিৎসা নেবেন। তবে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। আগের শর্তগুলো বহাল থাকবে। স্থায়ী জামিন পেতে হলে তাকে আদালতে যেতে হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে আরও দুই দফায় (প্রতিবার ৬ মাস করে) তার সাজার স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।

গত বছর মার্চে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তার পরিবার থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় তার (খালেদা জিয়া) দণ্ডাদেশ স্থগিত করে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই আদেশে গত বছর ২৫ মার্চ তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্তি পান। এরপর গত বছর সেপ্টেম্বর ও চলতি মার্চে দুই দফায় ছয় মাস করে সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষ তৃতীয় দফায় তা বাড়ানো হলো। এ নিয়ে তিন দফায় মোট ১৮ মাস তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়াল সরকার। এছাড়া শুরুতে সাজা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এবারের মেয়াদ শেষ হলে স্থগিতের সময় ২৪ মাস পূর্ণ হবে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার ভয় পায় বলেই খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। এর আগে তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হলেও সরকার তা দেয়নি। তাই বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় আমরা খুব আর্শ্চয হইনি। মূল বিষয়টা হচ্ছে, তারা খালেদা জিয়াকে এত বেশি ভয় পান যে, কোনো মতেই তাকে দেশের বাইরে যাওয়া বা মুক্ত করার বিষয়টা ভাবতেই পারে না। চিকিৎসকরা তার উন্নত চিকিৎসায় বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দিলেও সরকার তাতে মত দিচ্ছে না।

খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির জন্য তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মতামতের জন্য তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তার (খালেদা জিয়া) সাজা আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করার পক্ষে আইন মন্ত্রণালয় থেকে মত দেওয়া হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের মতসহ প্রস্তাবটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর তা ফেরত আসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে ১১ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। শারীরিক দুর্বলতার কারণে ২৭ এপ্রিল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৫৩ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন তিনি। ইতোমধ্যে করোনার দুই ডোজ টিকাও নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাজায় কারাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে। দীর্ঘ দুবছর কারাভোগের পর সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান তিনি।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.